সরাসরি বিষয়বস্তুতে যান

সরাসরি বিষয়সূচিতে যান

অধ্যয়ন প্রবন্ধ ৩

গান ৩৫ ‘বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো নির্ণয় করো’

এমন সিদ্ধান্ত নিন, যা যিহোবাকে খুশি করে

এমন সিদ্ধান্ত নিন, যা যিহোবাকে খুশি করে

“যিহোবার প্রতি ভয় প্রজ্ঞার আরম্ভ, পরম পবিত্র ঈশ্বর সম্বন্ধে জ্ঞানই বোঝার ক্ষমতা।”হিতো. ৯:১০.

আমরা কী শিখব?

প্রজ্ঞা, বুদ্ধি ও বিচক্ষণতা থাকলে কীভাবে আমরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারব?

১. আমাদের প্রত্যেককে কোন কঠিন বিষয়টা করতে হয়?

 প্রতিদিন আমাদের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই সহজ, যেমন আমরা সকালের জলখাবারে কী খাব অথবা কখন ঘুমাব। কিন্তু, কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া একটু কঠিন। আমরা বুঝতে পারি না যে, আমরা কী করব। কারণ এই সিদ্ধান্তগুলো আমাদের স্বাস্থ্য, আমাদের আনন্দ অথবা আমাদের পরিবারের সদস্যদের আর এমনকী আমাদের উপাসনার উপর প্রভাব ফেলতে পারে। আমরা প্রত্যেকে এমন সিদ্ধান্ত নিতে চাই, যেটার ফলে আমাদের এবং আমাদের পরিবারের সদস্যদের উপকার হয়। আর সবচেয়ে বড়ো বিষয় হল, আমরা চাই যেন আমাদের সিদ্ধান্ত যিহোবাকে খুশি করে।—রোমীয় ১২:১, ২.

২. কী করলে আপনি একটা ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন?

আপনি যদি (১) বিষয়টার সম্পূর্ণ তথ্য নেন, (২) সেই বিষয়ে যিহোবা কী চিন্তা করেন, তা জানেন এবং (৩) আপনার সামনে যে-আলাদা আলাদা বাছাই রয়েছে, সেগুলোর প্রত্যেকটা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করেন, তা হলে আপনার পক্ষে একটা ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হবে। এই প্রবন্ধে আমরা এই তিনটে বিষয় নিয়ে আলোচনা করব এবং এও জানব যে, আমরা কীভাবে আমাদের চিন্তা করার ক্ষমতাকে প্রশিক্ষিত করতে পারি।—হিতো. ২:১১.

বিষয়টার সম্পূর্ণ তথ্য নিন

৩. উদাহরণের সাহায্যে বলুন যে, একটা ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য বিষয়টার সম্পূর্ণ তথ্য নেওয়া কেন গুরুত্বপূর্ণ।

একটা ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সবচেয়ে প্রথমে আপনাকে বিষয়টার সম্পূর্ণ তথ্য নিতে হবে। এটা কেন গুরুত্বপূর্ণ? কল্পনা করুন, একজন ব্যক্তির একটা কঠিন রোগ হয়েছে এবং তিনি ডাক্তারের কাছে গিয়েছেন। ডাক্তার কি তাকে ভালোভাবে পরীক্ষা না করে অথবা তাকে প্রশ্ন জিজ্ঞেস না করে সিদ্ধান্ত নেবেন যে, তার জন্য কোন চিকিৎসা সঠিক হবে? না, একজন ভালো ডাক্তার কখনোই এমনটা করবেন না। একইভাবে, আপনি যদি বিষয়টার সম্পূর্ণ তথ্য নেন, তা হলে আপনি একটা ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। কিন্তু প্রশ্ন হল, আপনি কীভাবে বিষয়টার সম্পূর্ণ তথ্য নিতে পারেন?

৪. আপনি কোনো বিষয়ের সম্পূর্ণ তথ্য কীভাবে নিতে পারেন? (হিতোপদেশ ১৮:১৩) (ছবিও দেখুন।)

অনেকসময় বিভিন্ন প্রশ্ন জিজ্ঞেস করার মাধ্যমে আমরা বিষয়টার সম্পূর্ণ তথ্য পেতে পারব। কল্পনা করুন, আপনাকে একটা পার্টিতে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে। আপনি কীভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন যে, আপনার সেখানে যাওয়া উচিত কি না? যিনি পার্টির আয়োজন করেছেন, আপনি যদি তাকে ভালোভাবে না জানেন অথবা আপনি যদি না জানেন, সেখানে কোন ব্যবস্থা করা হবে, তা হলে আপনি সেই ব্যক্তিকে এই ধরনের কিছু প্রশ্ন জিজ্ঞেস করতে পারেন: “এই পার্টি কখন এবং কোথায় হবে? এখানে কত লোক আসবে? সব কিছু ভালোভাবে হচ্ছে কি না, তা কে খেয়াল রাখবে? এখানে কে কে আসবে? সেখানে কী কী হবে? সেখানে কি মদের ব্যবস্থাও থাকবে?” এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানলে আপনি এক ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন।—পড়ুন, হিতোপদেশ ১৮:১৩.

প্রশ্ন জিজ্ঞেস করে বিষয়টার সম্পূর্ণ তথ্য নেন (৪ অনুচ্ছেদ দেখুন) a


৫. কোনো বিষয়ে তথ্য নেওয়ার পর আপনার কী করা উচিত?

বিষয়টার সম্পূর্ণ তথ্য নেওয়ার পর আরও কিছু বিষয় নিয়ে চিন্তা করুন। যেমন, আপনি যদি জানতে পারেন যে, সেই পার্টিতে এমন লোকেরাও আসবে, যারা বাইবেলের মান অনুযায়ী চলে না অথবা সেখানে মদ খাওয়া হবে আর সেটা দেখাশোনার জন্য কেউ থাকবে না, তা হলে আপনি কী করবেন? আপনার কি মনে হয়, লোকেরা সেখানে অতিরিক্ত মদ খাবে এবং খারাপ আচরণ করবে? (১ পিতর ৪:৩) এই বিষয়েও চিন্তা করুন: এই পার্টি যে-সময়ে রাখা হয়েছে, সেই সময়ে কি আপনার সভা হয় অথবা আপনার প্রচার থাকে? এভাবে আপনি যখন সেই বিষয়টা নিয়ে ভালোভাবে চিন্তা করবেন, তখন আপনার জন্য ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবে। কিন্তু, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনাকে আরও কিছু করতে হবে। এই পর্যন্ত আপনি বিষয়টাকে শুধুমাত্র নিজের দৃষ্টিকোণ থেকেই দেখেছেন। কিন্তু, এখন এটাকে যিহোবার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার চেষ্টা করুন। এটা জানার চেষ্টা করুন যে, তিনি এই বিষয়ে কী চিন্তা করেন।—হিতো. ২:৬.

যিহোবার চিন্তাভাবনা জানার চেষ্টা করুন

৬. যাকোব ১:৫ পদ অনুযায়ী আমাদের কোন বিষয়ে যিহোবার কাছে প্রার্থনা করা উচিত এবং কেন?

কোনো বিষয়ে যিহোবা কী চিন্তা করেন, এটা জানার জন্য তাঁর কাছে প্রার্থনা করুন। যিহোবা প্রতিজ্ঞা করেছেন, তিনি আমাদের প্রজ্ঞা দেবেন, যেটার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারব যে, কোনো সিদ্ধান্তে তিনি খুশি হবেন কি না। আর যিহোবা এই প্রজ্ঞা “কারো উপর অসন্তুষ্ট না হয়ে সবাইকে উদারভাবে দান করেন।”—পড়ুন, যাকোব ১:৫.

৭. কোনো বিষয়ে যিহোবার চিন্তাভাবনা জানার জন্য আপনি কী করতে পারেন? উদাহরণ দিন।

যিহোবার কাছে প্রজ্ঞা চেয়ে প্রার্থনা করার পর লক্ষ করুন যে, কীভাবে তিনি আপনার প্রার্থনার উত্তর দেন। এটা বোঝার জন্য কল্পনা করুন, আপনি কোথাও বেড়াতে গিয়েছেন। কিন্তু, আপনি রাস্তা হারিয়ে ফেলেছেন। সেইসময় আপনি সেখানে বসবাসকারী একজন ব্যক্তির কাছে রাস্তা জিজ্ঞেস করেন। কিন্তু, আপনি কি তার কথা না শুনেই সেখান থেকে চলে যাবেন? একদমই না। তিনি যখন আপনাকে রাস্তা বলবেন, তখন আপনি মন দিয়ে তার কথা শুনবেন। একইভাবে, যিহোবার কাছে প্রজ্ঞা চেয়ে প্রার্থনা করার পর লক্ষ করুন, তিনি আপনাকে কোন উত্তর দেন। এটা বোঝার চেষ্টা করুন, বাইবেলের কোন আইন এবং নীতিগুলো থেকে আপনি সেই বিষয়ে যিহোবার চিন্তাভাবনা জানতে পারেন। যেমন, আপনাকে যে-পার্টিতে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে, সেখানে যাবেন কি না, এটা সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় চিন্তা করুন, বাইবেলে এই ধরনের পার্টির বিষয়ে কী বলা হয়েছে, যেখানে লোকেরা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে? আর খারাপ ব্যক্তিদের সঙ্গে মেলামেশা করার বিষয়ে এবং নিজের আকাঙ্ক্ষাগুলোর চেয়ে ঈশ্বরের রাজ্যকে প্রথম স্থান দেওয়ার বিষয়ে কী বলা হয়েছে?—মথি ৬:৩৩; রোমীয় ১৩:১৩; ১ করি. ১৫:৩৩.

৮. আপনার যদি মনে হয়, কোনো বিষয়ে আরও একটু তথ্য নিলে ভালো হবে, তা হলে আপনি কী করতে পারেন? (ছবিও দেখুন।)

কিন্তু, আপনার হয়তো এমনটা মনে হচ্ছে যে, এই বিষয়ে আরও একটু তথ্য নিলে ভালো হবে। এই ক্ষেত্রে আপনি কী করতে পারেন? আপনি কোনো অভিজ্ঞ ভাই অথবা বোনের কাছ থেকে সাহায্য নিতে পারেন। এ ছাড়া, আপনি নিজেও গবেষণা করতে পারেন। আমাদের কাছে গবেষণা করার জন্য বিভিন্ন প্রকাশনা রয়েছে, যেমন যিহোবার সাক্ষিদের জন্য গবেষণা নির্দেশিকা এবং খ্রিস্টান হিসেবে জীবনযাপন করার জন্য বাইবেলের নীতি বই। এগুলোতে আপনি বিভিন্ন তথ্য পেতে পারেন। কিন্তু, এটা করার সময় লক্ষ করুন যে, আপনি কেন গবেষণা করছেন, কারণ আপনি এমন এক সিদ্ধান্ত নিতে চান, যেটা যিহোবাকে খুশি করবে।

যিহোবার চিন্তাভাবনা জানার চেষ্টা করুন (৮ অনুচ্ছেদ দেখুন) b


৯. কখন আমরা পুরোপুরি নিশ্চিতভাবে এটা বলতে পারব যে, আমাদের সিদ্ধান্ত যিহোবাকে খুশি করবে? (ইফিষীয় ৫:১৭)

কখন আমরা পুরোপুরি নিশ্চিতভাবে বলতে পারব যে, যিহোবা আমাদের সিদ্ধান্তে খুশি হবেন? এর জন্য সবচেয়ে প্রথমে আমাদের তাঁকে ভালোভাবে জানতে হবে। বাইবেলে লেখা আছে, “পরম পবিত্র ঈশ্বর সম্বন্ধে জ্ঞানই বোঝার ক্ষমতা।” (হিতো. ৯:১০, NW) তাই আমরা সঠিক অর্থে তখনই জ্ঞান অর্জন করতে পারব, যখন আমরা ঈশ্বরকে ভালোভাবে জানব অর্থাৎ এটা জানব যে, তাঁর মধ্যে কোন কোন গুণ রয়েছে, তাঁর উদ্দেশ্য কী এবং তিনি কী পছন্দ করেন এবং কী অপছন্দ করেন না। তাই নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, ‘আমি যিহোবাকে যতটা জানি, সেই বিষয়টা মাথায় রেখে আমার কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত, যেটা তাঁকে খুশি করবে?’ —পড়ুন, ইফিষীয় ৫:১৭.

১০. বাইবেলের নীতি মেনে চলা কেন পরিবারের ঐতিহ্য ও স্থানীয় সংস্কৃতির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ?

১০ যিহোবাকে খুশি করার জন্য কখনো কখনো আমাদের হয়তো এমন কোনো সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে, যেটা আমাদের প্রিয়জনেরা পছন্দ করবে না। যেমন হয়তো একজন ভাইয়ের পরিবার তার বিয়ে এমন কোনো মেয়ের সঙ্গে করাতে চায়, যার পরিবারের কাছ থেকে তারা অনেক কিছু পাবে, যদিও যিহোবার সঙ্গে সেই মেয়ের সম্পর্ক ততটা দৃঢ় নয়। অন্যদিকে, একজন বোনের বাবা-মা তাকে এমন একজন ছেলের সঙ্গে বিয়ে করার জন্য চাপ দিতে পারে, যার অনেক টাকাপয়সা রয়েছে। কিন্তু, সে উদ্যোগের সঙ্গে যিহোবার সেবা করে না। হতে পারে, বাবা-মায়েদের উদ্দেশ্য ভালো এবং তারা চায় যেন তাদের সন্তানেরা সুখী হয় আর তাদের কোনো জিনিসের অভাব না হয়। কিন্তু, সেই ভাই অথবা বোনকেও চিন্তা করতে হবে, ‘আমি যদি এই ব্যক্তিকে বিয়ে করি, তা হলে যিহোবার সঙ্গে আমার সম্পর্ক কি দৃঢ় হবে না কি দুর্বল হয়ে যাবে?’ যিহোবা সেই ভাই অথবা বোনের কাছ থেকে কী চান? মথি ৬:৩৩ পদে খ্রিস্টানদের উৎসাহিত করা হয়েছে, তারা যেন ‘ঈশ্বরের রাজ্যকে জীবনে প্রথম স্থান’ দেয়। যদিও আমরা আমাদের বাবা-মা এবং আমাদের সমাজে যে-লোকেরা রয়েছে, তাদের সম্মান করি, কিন্তু, সবচেয়ে বড়ো বিষয় হল, আমরা যিহোবাকে খুশি করতে চাই।

আপনার সামনে যে-বাছাই রয়েছে, তা নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন

১১. আপনার সামনে যে-বাছাইগুলো রয়েছে, সেগুলো নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করার জন্য কোন বিষয়টা আপনাকে সাহায্য করতে পারে? (ফিলিপীয় ১:৯, ১০)

১১ আপনি এটা জেনে গিয়েছেন যে, কোনো বিষয়ে বাইবেলের কোন নীতি আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এখন আপনার সামনে যে-আলাদা আলাদা বাছাই খোলা রয়েছে, সেই বিষয়ে গভীরভাবে চিন্তা করুন। (পড়ুন, ফিলিপীয় ১:৯, ১০.) কোন বাছাইটা করলে কোন পরিণতি হবে, এটা জানার জন্য “বিচক্ষণতা” আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া আপনার জন্য সহজ হয়ে যাবে। কিন্তু, কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয় না। অনেকসময় পরিস্থিতি এতটাই কঠিন হয় যে, আমরা বুঝতে পারি না, আমাদের কী করা উচিত। কিন্তু, বিচক্ষণতা ব্যবহার করলে আমরা এই ক্ষেত্রেও ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারব।

১২-১৩. বিচক্ষণতা ব্যবহার করে আপনি কীভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে, আপনার কোন চাকরিটা করা উচিত?

১২ ধরুন, আপনি সংসার চালানোর জন্য চাকরি খুঁজছেন। আর আপনি দুটো চাকরি খুঁজে পেয়েছেন। এখন আপনাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে যে, আপনি কোন চাকরিটা বাছাই করবেন। আপনি সমস্ত তথ্য একত্রিত করেছেন এবং এটা জেনেছেন যে, দুটো চাকরিতেই আপনাকে কোন কাজ করতে হবে, কত ঘণ্টা কাজ করতে হবে, যাওয়া-আসা করতে আপনার কত সময় লাগবে, ইত্যাদি। দুটো চাকরিই বাইবেলের নীতি অনুযায়ী সঠিক। হয়তো আপনার একটা চাকরি বেশি ভালো লাগছে কারণ সেই কাজটা আপনি পছন্দ করেন অথবা সেটা করলে আপনি বেশি বেতন পাবেন। কিন্তু, কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আপনাকে আরও কিছু বিষয় নিয়ে চিন্তা করতে হবে।

১৩ যেমন, আপনি এই দুটো চাকরি বিবেচনা করতে পারেন: আমি যদি এই চাকরিটা করি, তা হলে সভায় যাওয়া কি আমার জন্য কঠিন হয়ে যাবে? আমি কি আমার পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পারব এবং তাদের খেয়াল রাখতে পারব? আমি কি তাদের যিহোবার নিকটবর্তী হতে সাহায্য করতে পারব? এই ধরনের প্রশ্নগুলো নিয়ে চিন্তা করলে আপনি টাকাপয়সার চেয়ে আপনার পরিবার এবং যিহোবার সঙ্গে আপনার সম্পর্কের উপর মনোযোগ দিতে পারবেন, যেটা হল সবচেয়ে ‘বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।’ এভাবে আপনি এমন একটা সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন, যেটা যিহোবাকে খুশি করবে এবং তিনি আপনাকে আশীর্বাদ করবেন।

১৪. বিচক্ষণতা ব্যবহার করলে এবং লোকদের প্রতি ভালোবাসা থাকলে আমরা কীভাবে খেয়াল রাখতে পারব যে, আমরা যেন অন্যদের বিশ্বাস হারানোর কারণ না হই?

১৪ বিচক্ষণতা ব্যবহার করলে আমরা এই বিষয়েও চিন্তা করব যে, আমাদের সিদ্ধান্ত অন্যদের উপর কোন প্রভাব ফেলতে পারে। তাই, আমরা এমন কিছু করব না, যেটার ফলে আমরা অন্যদের “বিশ্বাস হারানোর কারণ” হয়ে যাব। (ফিলি. ১:১০) যখন আমরা ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে কিছু সিদ্ধান্ত নিই, তখন আমাদের এই বিষয়টা আরও বেশি খেয়াল রাখতে হবে। যেমন, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় যে, আমরা কী পরব, কেমন চুলের স্টাইল করব অথবা কীভাবে সাজব। হতে পারে, আমাদের কোনো স্টাইলের কাপড় পরতে অথবা কোনো ধরনের চুলের স্টাইল করতে ভালো লাগে। কিন্তু, আমাদের চিন্তা করতে হবে, ‘এই কারণে মণ্ডলীর ভাই-বোনেরা বিঘ্ন পাবে না তো?’ বিচক্ষণতা ব্যবহার করলে আমরা অন্যদের প্রতি সম্মান দেখাতে পারব। আমরা লোকদের ভালোবাসি, তাই আমরা তাদের “উপকারের” কথা চিন্তা করব এবং বিনয়ী থাকব। (১ করি. ১০:২৩, ২৪, ৩২; ১ তীম. ২:৯, ১০) এভাবে আমরা এমন এক সিদ্ধান্ত নিতে পারব, যেটা দেখাবে যে, আমরা অন্যদের প্রেম করি এবং তাদের সম্মান দেখাই।

১৫. কোনো বড়ো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কী করা ভালো হবে?

১৫ যিশু বলেছেন, কোনো কিছু করার আগে আমরা যেন ‘ব্যয় হিসাব করে দেখি।’ (লূক ১৪:২৮) লক্ষ করুন, আপনি যে-সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা চিন্তা করছেন, সেই অনুযায়ী চলার জন্য আপনাকে কত কিছু করতে হবে, আপনাকে কতটা সময় ব্যয় করতে হবে, কোন প্রচেষ্টা করতে হবে এবং কতটা পরিশ্রম করতে হবে। কিছু ক্ষেত্রে আপনি হয়তো আপনার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে চাইবেন যে, পরিবারের প্রত্যেকে কীভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারে। এই সমস্ত কিছু করা কেন ভালো? কারণ এর ফলে আপনি হয়তো বুঝতে পারবেন, আপনার সিদ্ধান্তে কোনো রদবদল করার প্রয়োজন আছে কি না অথবা অন্য কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া ভালো হবে কি না। আর আপনি যদি আপনার পরিবারের সদস্যদের মতামত নেন এবং তাদের কথা শোনেন, তা হলে তারা আনন্দের সঙ্গে আপনাকে সাহায্য করবে যেন আপনি এক ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং যেন তা সফল হয়।—হিতো. ১৫:২২.

এক ভালো সিদ্ধান্ত নিন

১৬. একটা ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য আপনাকে কোন পদক্ষেপগুলো নিতে হবে? (“ কীভাবে ভালো সিদ্ধান্ত নেব?” শিরোনামের বাক্সটা দেখুন।)

১৬ আপনি যদি এই প্রবন্ধে বলা সমস্ত পদক্ষেপ নিয়ে থাকেন, তা হলে আপনি এখন এক ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য প্রস্তুত, এমন এক সিদ্ধান্ত যেটা যিহোবাকে খুশি করবে। যেমন, আপনি বিষয়টার সঙ্গে জড়িত সমস্ত তথ্য একত্রিত করেছেন এবং বাইবেলের নীতিগুলোও লক্ষ করেছেন। এখন আপনি যিহোবার কাছে প্রার্থনা করতে পারেন, যেন তিনি আপনাকে এমন এক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেন, যেটা ভালো ফল নিয়ে আসবে।

১৭. এক ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টা কী?

১৭ হতে পারে, অতীতে আপনি বিভিন্ন ভালো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু, আপনি যদি নিজের অভিজ্ঞতা অথবা দক্ষতার উপর নির্ভর করে কোনো সিদ্ধান্ত নেন, তা হলে সেটা যে ভালো সিদ্ধান্ত হবে, এমন নয়। একটা সিদ্ধান্ত তখনই ভালো হয়, যখন আমরা যিহোবার কাছ থেকে পাওয়া প্রজ্ঞা অনুযায়ী সেটা নিই। যিহোবা আমাদের প্রজ্ঞা, সঠিক জ্ঞান এবং বিচক্ষণতা দিতে পারেন, যেটার ফলে সত্যিই আমরা প্রজ্ঞাবান হতে পারব। (হিতো. ২:১-৫) এভাবে যিহোবা আমাদের এক ভালো সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করতে পারেন, এমন এক সিদ্ধান্ত যেটা তাঁর হৃদয়কে আনন্দিত করবে।—গীত. ২৩:২, ৩.

গান ২৮ যিহোবার বন্ধুত্ব লাভ করা

a ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: কিছু যুবকবয়সি ভাই-বোনদের ফোনে ম্যাসেজ এসেছে যে, তাদের একটা পার্টিতে নিমন্ত্রণ করা হয়েছে আর তারা সবাই এই বিষয়ে কথা বলছে।

b ছবি সম্বন্ধে বর্ণনা: তাদের মধ্যে একজন ভাই সেই বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে গবেষণা করছেন।