এটা কি সুপরিকল্পিতভাবে সৃষ্ট?
মানবদেহের ক্ষত সারানোর ক্ষমতা
মানবজীবন টিকিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় অজস্র প্রক্রিয়ার মধ্যে একটা হল, ক্ষত সারিয়ে তোলার এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষের জায়গায় নতুন কোষ উৎপন্ন করার ক্ষেত্রে দেহের নিজস্ব ক্ষমতা। আঘাত লাগার সঙ্গেসঙ্গেই এই প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যায়।
বিবেচনা করুন: ক্ষত সারানোর এই প্রক্রিয়া কোষের অসংখ্য জটিল কাজের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে:
-
অনুচক্রিকাগুলো ক্ষতস্থানের চারপাশের কলাগুলোতে জমা হয়, যার ফলে ওই স্থানে রক্ত জমাট বেঁধে ক্ষতিগ্রস্ত রক্তনালিকার মুখ বন্ধ করে দেয়।
-
এরপর ক্ষতস্থান ফুলে গিয়ে জ্বালা করে, যা সংক্রমণ প্রতিরোধ করে এবং আঘাতের ফলে উৎপন্ন যেকোনো “আবর্জনা” দূর করে দেয়।
-
কয়েক দিনের মধ্যে দেহের ক্ষতিগ্রস্ত কলাগুলো প্রতিস্থাপিত হতে শুরু করে, ক্ষতস্থান সংকুচিত হয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত রক্তনালিকাগুলো পুনরায় গঠিত হয়।
-
পরিশেষে, আঘাতপ্রাপ্ত কলাগুলো পুনর্গঠিত হয় এবং ক্ষতস্থানকে সারিয়ে তোলে।
রক্ত জমাট বাঁধার এই প্রক্রিয়ার দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে গবেষকরা এমন এক ধরনের প্লাস্টিক আবিষ্কার করার প্রচেষ্টা করছেন, যা নিজে নিজেই কোনো ক্ষতিগ্রস্ত স্থানকে ‘মেরামত’ করতে পারে। এই ধরনের প্লাস্টিকে সরু সরু সমান্তরাল টিউব থাকে, যেগুলোর ভিতরে দুটো রাসায়নিক পদার্থ থাকে। যখন কোনো অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখন সেই টিউবগুলো থেকে রাসায়নিক পদার্থ ‘ক্ষরিত’ হয়। সেই দুটো রাসায়নিক পদার্থ মিশে গিয়ে এক ধরনের থকথকে মিশ্রণ তৈরি হয়, যা ক্ষতিগ্রস্ত স্থানের চারিদিক ছড়িয়ে যায় এবং ফাটল ও ছিদ্রের মুখ বন্ধ করে দেয়। সেই থকথকে মিশ্রণ জমাট বেঁধে এক শক্ত পদার্থ তৈরি করে, যা প্লাস্টিককে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনে। একজন গবেষক স্বীকার করেন, এই কৃত্রিম মেরামত পদ্ধতি নিয়ে এখনও গবেষণা চলছে আর এটা সেই প্রক্রিয়ার কথা “মনে করিয়ে দেয়,” যেটা ইতিমধ্যে প্রকৃতিতে রয়েছে।
আপনি কী মনে করেন? দেহের ক্ষত সারানোর ক্ষমতা কি ক্রমবিবর্তনের মাধ্যমে এসেছে? না কি এটাকে সুপরিকল্পিতভাবে সৃষ্টি করা হয়েছে? ◼ (g15-E 12)